1. news@gmail.com : news :

সার আমদানিতে সরকারের অতিরিক্ত ব্যয় হবে ১৮ হাজার কোটি টাকা

  • প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০২৫

কৃষি প্রধাান দেশ বাংলাদেশে আগামী বোরো-রবি মৌসুমে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কৃষকের কাছে পৌছবেনা সার।

আগামী বোরো-রবি মৌসুমে ব্যাহত হবে দেশে খাদ্য উৎপাদন। ফলে দেশে দেখা দিতে পারে চরম খাদ্য সংকট।
বিগত সময়ে প্রতি বছর এপ্রিল-মে মাসে সার কেনার আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হলেও কৃষি মন্ত্রনালয়ের উর্দ্ধতন একজন কর্মকর্তার গোঁয়ামীর কারনে চলতি বছরের এপ্রিল-মে মাসেও সার ক্রয়ের আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করেনি কৃষি মন্ত্রণালয়। কিন্তু এপ্রিল- মে মাসে দিকে বিশ্ববাজারে সারেরর দাম অনেকটা কম থাকলেও বর্তমানে সারের দর প্রায় দেড় থেকে দ্বিগুন বেশী। যার কারনে চলতি অর্থবছরে সরকারকে প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা বেশি গুনতে হবে কৃষি মন্ত্রণালয়কে। সেইসঙ্গে দেশে সার সংকটেরও চরম আশঙ্কা তাদের।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, বর্তমানে বিএডিসির গুদামে বর্তমানে মজুদ আছে মাত্র ১৩ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে ৬ লাখ ৭০ হাজার টন নন-ইউরিয়া, ১লাখ ৫ হাজার টন টিএসপি, ২লাখ ৪০ হাজার টন ডিএপি এবং ২লাখ ৮০ হাজার টন এমওপি। দেশে সারের চাহিদা রয়েছে ৭০ লাখ টন। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগন্য।

চলতি বছরের নন-ইউরিয়া সারের চাহিদা ৩১ লক্ষ মেট্রিক টন। জি টু জি তে নতুন যে চুক্তি হয়েছে সেই সার সম্পূর্ণ পেতে আগামী বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। গেলো অর্থবছরে দেশে সারের চাহিদা ছিলো ৬৯ লাখ টন। চলতি বছরে দেশে ইউরিয়া ও নন ইউরিয়া সারের চাহিদা রয়েছে ৭০ লাখ টন।

বিগত সময়ে দেশে সার আমদানির নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ অর্জিত হয়েছিল। কিন্তু জি টু জি পদ্ধতিতে আমদানির আমদানির বিবিধ কারণে লক্ষ্য মাত্রা ২০ থেকে ২৫% শতাংশ অর্জন করা সম্ভব হয়নি। গত অর্থবছরে বেসরকারিভাবে আমদানির লক্ষমাত্রা সম্পূর্ণ ভাবে অর্জিত হলেও জি টু জিতে লক্ষমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয় মন্ত্রনালয়।

সূত্রটি আরো জানায়, বিশ্ব বাজারে সারের মূল্য প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে । বছরের প্রথম দিকে ফসফেট জাতীয় সারের আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য ছিল ৬৫০ ডলার বর্তমানে মূল্য বেড়ে ৮৮০ ডলার হয়েছে। এমওপি সারের বাজার মূল্য ২৮০-২৯০ ডলার থাকলেও বর্তমানে বাজার মূল্য বেড়ে দাঁড়িছে ৩৫০-৩৬০ ডলার। বিশ্ববাজারে সারের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবং নির্ধরিত সময়ে সার আমদানি সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় আগামী রবি ও বোরো মৌসুমে সঠিক সময়ে সার সরবরাহের অনিশ্চয়তা দেখা দিবে।

সূত্রটি আরো জানায়, গত বছর জি টু জি আমদানিতে সবচেয়ে বেশি ফসফেট জাতীয় সার আমদানি হয়েছিল মরক্কো থেকে। কয়েকদিন আগেই মরক্কোর সাথে ৪ লাখ টন ফসফেট জাতীয় সার আমদানি একটি চুক্তি বিএডিসি সাথে হলেও এখন পর্যন্ত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে এই চুক্তি। মরক্কো চুক্তি অনুযায়ী জিটুজি মাধ্যমে তাদের সুযোগ বুঝে বাংলাদেশ কে প্রদান করবে ১লাখ টন। এছাড়া চীনের সাথে ফসফেট জাতীয় সারের আমদানির চুক্তি থাকলেও বর্তমানে চায়নাতে নেই কোন ফসফেট জাতীয় সার। গত জুন মাস পর্যন্ত সার প্রদানের জন্য অপেক্ষা করে অন্য দেশে বিক্রি করে দিয়েছে চায়না কোম্পানী। এছাড়া বেসরকারি ভাবে আমদানির দরপত্র এখনো আহ্বান করা হয়নি সরকার। যদি নির্ধারিত সময়ের পূর্বে সারের মজুদ নিশ্চিত করা না হয় তাহলে চলতি বছরের কৃষকের সার পাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়বে।

সূত্রটি আরো জানায়, গত ১৬ জুলাই মালয়েশিয়ার ফেডারেল ল্যান্ড কনসোলিডেশন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন অথরিটি (এফইএলসিআরএ) নামে নাম স্বর্বস্থ একটি অখ্যাত কোম্পানীর সাথে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) পক্ষে চেয়ারম্যান মোঃ রুহুল আমিন ও মালয়েশিয়ার ফেডারেল ল্যান্ড কনসোলিডেশন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন অথরিটি (এফইএলসিআরএ) পক্ষে এফইএলসিআরএ চেয়ারম্যান ড. শংকর রাসাম চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। প্রকৃত পক্ষে মালয়েশিয়ার ফেডারেল ল্যান্ড কনসোলিডেশন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন অথরিটি (এফইএলসিআরএ) এখন পর্যন্ত নিজ দেশে কোন সার উৎপাদন করেনি। এছাড়া মালয়েশিয়া সরকার নিজের দেশের জন্য বিশে^র অন্যান্য দেশ থেকে সার আমদানী করে নিজ দেশের চাহিদা মিটাচ্ছে।

সূত্রটি আরো জানায়, অন্তর্বতীকালীন সরকারকে বিপাকে ফেলতে এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণ অভ্যুত্থানকে ব্যর্থ করতে সুকৌশলে বিগত ফ্যাসিস আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাাহ মিয়ান। এক সময়ে তুখুড় ছাত্রলীগ নেতা কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাাহ মিয়ান ছিলেন ছিলেন বিগত ফ্যাসিস আওয়ামী সরকারের অন্যতম সহযোগী এবং মুজিব জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির অন্যতম সদস্য।

কৃষি সচিব হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সুকৌশলে দেশে সারের সংকট তৈরি করেছে। যার ফলে চলতি বোরো মৌসুমের শুরুতেও সারাদেশে দেখা দিয়েছে সারের চরম সংকট। দেশের কোথাও বিএডিসি এবং বিসিআইসি’র গুদামে ছিলোনা কোন সার। সারের জন্য প্রান্তিক চাষীরা বিভিন্ন জায়গায় ধরনর্ণা দিয়েও পায়নি কোন সার। এই মুহূর্তে সার সংকটের কোন সমাধান না হয় তাহলে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বে দেশের কৃষিখাত। সারের এই অবস্থা চলমান থাকলে চলতি বোরো মৌসুমে সার সংকটের কারনে দেশের চরম খাদ্যসংকট দেখা দিবে এবং খাদ্য উৎপাদন কমে গেলে খাদ্য আমদানি করে দেশের বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হবে সরকার। যে কোন মুহূর্তে সরকারের বিরুদ্ধে ফেঁসে উঠবে দেশের জনগণ। এই সঙ্কট মোকাবেলা করা সরকারের পক্ষে হয়ে পড়বে অসম্ভব।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর


প্রযুক্তি সহায়তায়: Star Web Host It