মাগুরায় আট বছরের শিশু আছিয়ার ধর্ষণ ও হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, দেশে কুরআনি অনুশাসন নেই বলেই আছিয়াদের প্রতিনিয়ত ধর্ষণ ও জীবন দিতে হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর মিরপুরে ৬০ ফিট রাস্তা সংলগ্ন মিরপুর স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে মিরপুর পূর্ব থানা জামায়াত আয়োজিত স্থানীয় সুধীদের সম্মানে এক ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
এসময় জামায়াত আমির আছিয়ার মৃত্যুতে শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং তাকে জান্নাতের আলা মাকাম দানের জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার দরবার দোয়া করেন।
কুরআন-সুন্নাহর আদর্শের ভিত্তিতে দুর্নীতি, দুঃশাসন ও অপশাসনমুক্ত মানবিক বাংলাদেশ গড়তে জামায়াতে ইসলামী জনগণের কাছে কৃত অঙ্গীকার পালনে আপোষহীন বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে জামায়াত আমির।
তিনি বলেন, রমজান মাস এমন এক মহিমান্বিত মাস, যে মাসের প্রথম দশকে রহমত, মধ্য দশকে মাগফিরাত এবং শেষ দশকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তির সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে। এ মোবারক মাসেই বদর যুদ্ধ বিজয়ের মাধ্যমে ইসলাম প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি পেয়েছিলো। মক্কা বিজয়ও হয়েছে এ মাসেই। এরপর বড় বড় বিজয়ের মাধ্যমে ইসলাম বিশ্বের অপ্রতিরোধ্য শক্তিতে পরিণত হয়েছে। তাই বিশ্ব মানবতার মুক্তির জন্য ব্যক্তি, সমাজ, পরিবার ও রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে কুরআনের অনুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, কুরআন দিয়ে দেশ পরিচালিত হলে দেশে কোন অনিয়ম, দুর্নীতি, দুঃশাসন, খুন, ধর্ষণ অপহরণ কোন কিছুই থাকবে। যাকাত ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠিত দেশ দারিদ্রমুক্ত হবে। কোনো যুবক বেকার বা কর্মহীন থাকবে না। থাকবে না মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ বা বৈষম্য। তিনি দেশকে ইসলামী আদর্শের ভিত্তি কল্যাণ রাষ্ট্রের পরিণত করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালানোর আহ্বান জানান। তাহলে দেশকে একটি শান্তির নীড়ে পরিণত করা সম্ভব।
তিনি বলেন, মূলত, মানবরচিত মতবাদ দিয়ে দেশ শাসিত কারণে আমাদের সমাজ রাষ্ট্রে এতো অশান্তি। ফলে দেশ এখন অপরাধ ও অপরাধীদের রীতিমতো অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী এমন এক শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চায় যেখানে মানুষ নিজেদের অধিকার নিয়ে সুখে-শান্তিতে বসবাস করবে। দেশে কোন দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজী, ছিনতাই, অপহরণ ও ধর্ষণ সহ কোন অপরাধ থাকবে না। রাষ্ট্রই সকল নাগরিকের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা সহ সকল মৌলিক ও মানবীয় অধিকারের নিশ্চয়তা প্রদান করবে। এমন একটি শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য জীবনের সকল ক্ষেত্রে কুরআন-সুন্নাহর আদর্শ অনুসরণ করতে হবে। জামায়াতে ইসলামী কুরআনের আলোকে আলোকিত এক নতুন বাংলাদেশ গড়তে দেশ ও জাতির কাছে প্রতিশ্রতিবদ্ধ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, আল্লাহ তা’য়ালা আমাদেরকে মাহে রমযানের নিয়ামত দান করেছেন যাতে আমরা তাকওয়া অর্জন করে নিজেদের পরিশুদ্ধ করার মাধ্যমে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি অর্জন করতে পারি। মূলত, সিয়াম আমাদেরকে সভ্য, সুন্দর ও গতিশীল করে তোলে। তাই মাহে রমযানের শিক্ষা জীবনের সকল ক্ষেত্রে কাজে লাগিয়ে নিজেদের মধ্যে তাক্বওয়ার গুণাবলি সৃষ্টি করতে হবে।
থানা আমীর শাহ আলম তুহিনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি ওয়াহিদুল ইসলাম সাদীর পরিচালনায় ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য শাহাবুদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর আব্দুর রহমান মূসা ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দীন মানিক। উপস্থিত ছিলেন মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য জিয়াউল হাসান, মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ ও আনোয়ারুল করিম, কাফরুল পশ্চিম থানা আমীর আব্দুল মতিন খান, শ্রমিক নেতা মিজানুর রহমান ও মিরপুর পূর্ব থানা নায়েবে আমীর আনিসুর রহমান প্রমূখ।
(বাংলাদেশের অর্থনীতি ডটকম/১৪মার্চ)
প্রযুক্তি সহায়তায়: Star Web Host It