1. news@gmail.com : news :

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশ সফল করতে জামায়াতের ব্যাপক প্রস্তুতি

  • প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০২৫
জামায়াতে ইসলামী

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আগামী ১৯ জুলাই ‘জাতীয় সমাবেশ’ করতে যাচ্ছে। এ সমাবেশ সফল করতে দলটি ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।

এ উপলক্ষে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে একটি দল ইতোমধ্যে অনুষ্ঠানস্থল পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শনকালে তিনি উদ্যানের বিভিন্ন অংশ ঘুরে ঘুরে দেখেন এবং জাতীয় সমাবেশ সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।

এ সময় মিয়া গোলাম পরওয়ার জাতীয় সমাবেশ সফল করে তুলতে সাংবাদিকদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। সকল গণহত্যার বিচার, প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার, জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন, পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান, প্রবাসীদের ভোট প্রদানের ব্যবস্থা এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার দাবিতে এই ‘জাতীয় সমাবেশ’ অনুষ্ঠিত হবে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশের পরিকল্পনা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকেও (ডিএমপি) ইতোমধ্যে দলের পক্ষ থেকে অবহিত করা হয়েছে।

সোহরাওয়ার্দীর এই ‘জাতীয় সমাবেশের’ প্রস্তুতির বিষয়ে জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, আগামী ১৯ জুলাই দুপুর ২টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ আয়োজনের সব ধরনের প্রস্ততি আমাদের প্রায় চূড়ান্ত।

এ জাতীয় সমাবেশে ঢাকা ও এর আশপাশের জেলা থেকে আমাদের জনশক্তি আংশগ্রহণ করবেন। এ ছাড়া সারাদেশ থেকেও আমাদের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করছি। ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর আমরা বৃহত্তর পরিসরে কোন সমাবেশ করিনি।

এটাই আমাদের প্রথম সমাবেশ, তাই এ সমাবেশে লক্ষাধিক লোকের সমাবেশ ঘটবে বলে আমরা আশাকরি। এ সমাবেশে শুধু আমাদের দল নয়, ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে যে সব দল, যেমন, বিএনপি, ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত আন্দোলন, এনসিপিসহ আরও যে সব দল রয়েছে তারা সবাই অংশগ্রহণ করবেন। আমাদের দলের পক্ষ থেকে তাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

জামায়াতে ইসলামী এর আগে পুরানা পল্টন, বায়তুল মোকাররম, পল্টন ময়দানসহ রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় অসংখ্য রাজনৈতিক কর্মসূচি ও সভা-সমাবেশ করেছে। কিন্তু ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এর আগে তারা কোন সভা-সমাবেশ করেনি। আগামী ১৯ জুলাই রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলটি যে ‘জাতীয় সমাবেশ’ করতে যাচ্ছে এটি তাদের জন্য প্রথম। সেদিক থেকে এটি জামায়াতের জন্য একটু ভিন্ন বা বিশেষ কিছু বলে দলটির সংশ্লিষ্ট নেতারা মনে করছেন। তাঁরা জানান, ১৯ জুলাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতে ইসলামীর ইতিহাসে প্রথম রাজনৈতিক সমাবেশ হবে। এর আগে জামায়াত কখনো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলীয়ভাবে সমাবেশ করেনি। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে যখন তীব্র মতবিরোধ ও বিতর্ক চলছে, সে সময়ে জামায়াত এই সমাবেশ করতে যাচ্ছে। সোহরাওয়ার্দীর এই সমাবেশে জামায়াত স্মরণীয় উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চাইছে। ইতিমধ্যে সমাবেশ বাস্তবায়নে দলের আমিরসহ শীর্ষ নেতাদের তদারকিতে ঢাকা মহানগরসহ সারা দেশে সাংগঠনিক তৎপরতা চালানো হচ্ছে। জামায়াতের লক্ষ্য, নীরবে বড় ধরনের সমাবেশ করে রাজনীতির ময়দানে আলোড়ন সৃষ্টি করা।

গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিএনপি, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠন রাজধানীতে বড় সমাবেশ করে। এর মধ্যে ইসলামী আন্দোলন, ওলামা মাশায়েখ বাংলাদেশ ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ভিন্ন ভিন্ন ইস্যুতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বড় মহাসমাবেশ করে। বিএনপি নয়াপল্টনে কয়েক দফায় সমাবেশ করে। কিন্তু জামায়াত কারাবন্দী নেতা (বর্তমানে মুক্ত) এ টি এম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে পুরানা পল্টন মোড়ে একটি সমাবেশ ছাড়া রাজধানীতে বড় কোনো জমায়েত করেনি। জামায়াতের দায়িত্বশীল নেতারা জানিয়েছেন, স্বাধীনতার পর ১৯৭৯ সালে রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু করার পর গত ৪৫ বছরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতে ইসলামী কখনো সমাবেশ করেনি। তবে বিএনপির সঙ্গে জোটে থাকতে তারা জোটবদ্ধভাবে সমাবেশে অংশ নিয়েছেন। ফলে দলীয়ভাবে আয়োজিত এই সমাবেশকে বিশেষ কিছু এবং জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে জনসমর্থন প্রকাশের ক্ষেত্র হিসেবে দেখছে। এই সমাবেশ বাস্তবায়নে দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারকে আহ্বায়ক করে কমিটি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের নেতৃত্বে একাধিক উপকমিটিও করা হয়েছে।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, শহীদের রক্তস্নাত বাংলায় ইসলামের পতাকা উত্তোলন এবং ইসলামি ঐক্যের কাক্সিক্ষত পরিবেশ সবার চাওয়া-পাওয়া। এই আকাক্সক্ষা সামনে রেখে ১৯ জুলাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ আয়োজন করা হচ্ছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জাতীয় সমাবেশ হবে আগামীদিনের ঐক্যের টার্নিং পয়েন্ট।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর


প্রযুক্তি সহায়তায়: Star Web Host It