লন্ডনে অনুষ্ঠিত ড. ইউনূস এবং তারেক রহমানের বৈঠক প্রসঙ্গে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস বিগত ৬ জুন জাতির উদ্দেশে প্রদত্ত ভাষণে ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন। তার এই ঘোষণার পর লন্ডনে সফরকালে একটি রাজনৈতিক দলের সাথে বৈঠক শেষে বিদেশে যৌথ প্রেস ব্রিফিং এবং বৈঠকের বিষয় সম্পর্কে যৌথ বিবৃতি প্রদান করা বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ব্যত্যয় বলে আমরা মনে করি। এর মাধ্যমে তিনি একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন, যা তার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ণ করেছে।
শনিবার জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের এক বৈঠক সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার পর উপরোক্ত অভিমত ব্যক্ত করা হয়।
বৈঠকে বলা হয়, ১৩ জুন লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এটাকে খুবই স্বাভাবিক মনে করে। ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে পৃথক পৃথকভাবে এবং যৌথভাবে বৈঠক করেছেন।
আমরা মনে করি দেশে ফিরে এসে প্রধান উপদেষ্টার অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা করে এব্যাপারে তার অভিমত প্রকাশ করাই সমীচীন ছিল।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বিগত ১৬ এপ্রিল একটি বিদেশি মিশনের সাথে বৈঠক শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে ২০২৬ সালের রোজার পূর্বে ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হতে পারে মর্মে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছিলেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনে করে, সরকার প্রধান হিসেবে কোনো একটি দলের সাথে যৌথ প্রেস ব্রিফিং নৈতিকভাবে কিছুতেই যথার্থ নয়। প্রধান উপদেষ্টা একটি দলের সাথে বৈঠকের পর যৌথ প্রেস ব্রিফিং করায় আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হওয়ার বিষয়ে জনগণের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যেখানে বাংলাদেশে অনেকগুলো রাজনৈতিক দল সক্রিয়ভাবে বিদ্যমান, সেখানে শুধু কোনো একটি দলের সাথে আলাপ করে দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সঠিক বলে বিবেচিত হতে পারে না। আমরা আশা করি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য বর্তমান অন্তর্বতীকালীন সরকার নিরপেক্ষ থেকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করবেন এবং বিচার ও সংস্কারের ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করবেন।
সরকারের নিরপেক্ষতা এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিয়ে যে সংশয় দেখা দিয়েছে তা নিরসনকল্পে প্রধান উপদেষ্টার ভূমিকা জাতির সামনে স্পষ্ট করার জন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।
প্রযুক্তি সহায়তায়: Star Web Host It