1. news@gmail.com : news :

চীন সফর শেষে দেশে ফিরলেন জামায়াত আমির

  • প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০২৫

চীন সফর শেষে দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান।

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টায় হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরের অবতরণ করেন আমিরসহ আট সদস্যের প্রতিনিধিদল।

এ সময় বিমানবন্দরের ভিআইপ লাউঞ্জে ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন-এর নেতৃত্বে একটি টিম জামায়াত আমির ডা: শফিকুর রহমানকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান।

জামায়াত নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের নায়েবে আমির সাবেক এমপি ডা: সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো: তাহের, সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মা’ছুম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, অ্যাডভোকেট মোয়াযযম হোসাইন হেলাল ও এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মো: সাহাবুদ্দিন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মো: সেলিম উদ্দিন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।

এ সময় চীনা রাষ্ট্রদূত ও জামায়াত আমির সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন।

ডা: শফিকুর রহমান বলেন, ‘চীনা রাষ্ট্রদূত আমাদের চীন সফরের শুরুর দিনও দলবল নিয়ে বিদায় দিতে এসেছিলেন। বিমানের দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিয়েছিলেন। আজো তিনি দলবল নিয়ে স্বাগত জানাতে এসেছেন। তিনি এটা না করলেও পারতেন। এটা তার নিয়মিত দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। নিশ্চয় বাংলাদেশের জনগনের প্রতি ভালোবাসা থেকে তিনি এটা করেছেন। একান্ত আন্তরিকতা না থাকলে তিনি আসতেন না। এজন্য তাকে আমাদের দলের পক্ষ থেকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সফরে প্রথমে সাংহাই যাই। সেখানে সাংহায় সিটি কতৃপক্ষের সাথে বৈঠক হয়। সাংহাই সিটি করপোরেশন চীনে গুরুত্বের দাবিদার। ইতোমধ্যে তারা ঢাবিতে একটি চায়নিজ কর্নার চালু করেছে। যাতে দু’ দেশের ভাষা, সংস্কৃতি বিনিময় ও বোঝাপোড়া বাড়ে সেজন্য এটি স্থাপন করা হয়েছে। আগামী এক বছরে দেশের আরো তিনটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এটি স্থাপনের জন্য তাদের কাছে আমরা অনুরোধ জানিয়েছি। জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চায়নিজ কর্নার স্থাপনের কথা বলেছি আমরা। তারা নীতিগতভাবে এ বিষয়ে একমত হয়েছেন এবং আগ্রহ দেখিয়েছেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘সাংহাই সরকারি থিংকট্যাংকের সাথে আমাদের বৈঠক হয়েছে। তারা বাংলাদেশ সম্পর্কে অনেক কিছু জানেন। আবার আমাদের কাছেও কিছু জানতে চেয়েছেন। তাদের সাথে আমাদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ হয়েছে।’

জামায়াত আমির বলেন, ‘গত ৩৪ বছরে চীন বিস্ময়কর উন্নয়ন করেছে। তারা এটি কিভাবে করেছে সেটা আমরা জানতে চেয়েছি। বোঝার চেষ্টা করেছি। এটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সরকার এবং দল হিসেবে জামায়াত দেশের মানুষের ভাগ্য বদলে কিভাবে কাজ করতে পারি সে বিষয়ে বোঝার চেষ্টা করেছি। আমরা এব দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছি। সবশেষ চীনা কমিউনিস্ট পাটির বিদেশ বিষয়ক নেতা ও ভাইস মিনিস্টারের সাথে বৈঠক হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘চীন ১৯৭৫ সালের ২৬ আগস্ট বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। এ বছর তাদের সাথে আমাদের সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি হচ্ছে। এজন্যই এ সফর ছিল। এজন্য বন্ধুত্বের বার্তা নিয়ে আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। আমরা আশা করছি, এ সফরের মাধ্যমে দু’ দেশের বন্ধুত্ব আরো বাড়বে এবং বিশেষ করে দল টু দলের সম্পর্ক আরো মজবুত হবে।’

ডা. শফিক বলেন, ‘অতীতে একটি দেশ আমাদের দেশের একটিমাত্র দলের সাথে সম্পর্ক করেছিল। জনগণের সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক ছিল না। আমরা চীনকে অনুরোধ করেছি-চীন যেন সরকার টু সরকার এবং সরকার টু জনগণের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখে। এছাড়া আমরা পার্টি টু পার্টি সম্পর্কের কথা বলেছি। আমাদের সব দলই দেশের স্বার্থে কাজ করে। এজন্য আমরা দেশের সব দলের কথা বলেছি। এখানে কাউকে বড় ছোট আলাদা না করার কথা বলেছি। আমরা সেখানে সব দলের হয়ে কথা বলেছি। জনগণের পক্ষে কথা বলে এসেছি। আশা করছি, আগামীতে আমাদের যাওয়া আসা আরো বাড়বে।’

জামায়াত আমির বলেন, ‘আমরা দলের পক্ষ থেকে শি জিন পিং কে দাওয়াত দিয়ে এসেছি। প্রেসিডেন্ট হিসেবে নয়, তার দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাওয়াত দিয়েছি। ফরমাল দাওয়াত তাদের দলের ভাইস চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ইতোমধ্যে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। তিনি এলে বাংলাদেশের মানুষ খুশি হবে, উপকৃত হবে এবং আমাদের বন্ধুত্বের মাত্রা আরো উচ্চ পর্যায়ে যাবে বলে আশা করছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা অন্যান্য দেশের সাথেও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায়। চীন একটি উন্নত ও বড় প্রতিবেশী দেশ। তারা টকেনোলোজিতে ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। তাদের এই বিশ্বয়কর পরিবর্তন হয়েছে মাত্র ৩৪ বছরে। অনেক কিছুই আছে সেখানে, যেটা আমরা কাজে লাগাতে পারি। কিন্তু আমাদের উন্নয়ন করতে সময় লাগবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘সফরকালে আমরা যে কয়টি জায়গায় গিয়েছি, চরম আন্তরিকতা ও আতিথেয়তা পেয়েছি। তাদের মধ্যে কোনো রকম কৃত্রিমতা দেখিনি। রিয়েলি ব্রাদারহুড আচারণ পেয়েছি। এজন্য তাদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’

গত ১০ জুলাই রাতে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল পাঁচ দিনের সফরে চীন যান। সফরে জামায়াত আমিরের সাথে আরো ছিলেন দলটির কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম ও মাওলানা মুহাম্মাদ শাহজাহান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, সংগঠনের শিল্প ও বাণিজ্য বিভাগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি ডা: আনোয়ারুল আজিম, জামায়াত আমিরের পিএস নজরুল ইসলাম এবং আইটি এক্সপার্ট ওমর হাসিব শফিউল্লাহ।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর


প্রযুক্তি সহায়তায়: Star Web Host It