বগুড়াবাসী তথা উত্তরাঞ্চলের মানুষের বহু যুগের প্রতীক্ষিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বগুড়া আঞ্চলিক কেন্দ্র উদ্বোধন করা হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ বলেছেন, শিক্ষার্থীদের আন্তজার্তিকভাবে মানসম্মত করে গড়ে তুলতে সংস্কারে হাত দিয়েছেন, এর মধ্য দিয়ে এক যুগান্তকারী পরিবর্তনের সাক্ষী হতে যাচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১০টায় বগুড়া টিটু মিলনায়তনে আয়োজিত এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আঞ্চলিক কেন্দ্রটি উদ্বোধন করেন উপাচার্য আমানুল্লাহ।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপাচার্য বলেন, ‘শুধু নামের কারণে বিশেষ এই জেলাকে দীর্ঘ সময় সব ধরনের রাষ্ট্রীয় সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এ জন্যই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বগুড়াকে প্রাধান্য দিয়ে আমরা এই আঞ্চলিক কেন্দ্র উদ্বোধন করছি।’
বগুড়া আঞ্চলিক কেন্দ্র উদ্বোধন হওয়ায় এখন এই অঞ্চলের প্রায় তিন শতাধিক কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে কাউকে আর রাজশাহী কিংবা ঢাকায় যাওয়ার প্রয়োজন হবে না বলে জানান উপাচার্য।
উপাচার্য তার বক্তৃতায় দেশের কলেজগুলোর গভর্নিং বডি, বিভিন্ন স্থানে মব জাস্টিজ, উচ্চশিক্ষার সিলেবাস, শিক্ষার মানোন্নয়ন, আর্থিক স্বচ্ছতা- এসব বিষয়েও কথা বলেন।
কলেজ গভর্নিং বডির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হলে সেই কমিটি সাথে সঙ্গে বাতিল করা হবে এবং বিধি অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি করে উপাচার্য বলেন, আগামী দিনে কলেজগুলোতে গভর্নিং বডি রাখা হবে কি না সেটাও এখন ভাবা হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মব জাস্টিসের মাধ্যমে অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের অসম্মান করার সংস্কৃতি আর চলতে দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি করেন তিনি।
কলেজে মনিটরিং, অডিট এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সব রকমের ব্যবস্হা ইতিমধ্যেই নেয়া হয়েছে যা কলেজগুলোর মান উন্নয়নে সাহায্য করবে বলে জানান তিনি।
অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ বলেন, ‘আশপাশের দেশগুলো বাংলাদেশের কাছাকাছি সময়ে স্বাধীনতা লাভ করে শিক্ষা, শিল্প ও সমৃদ্ধিতে এগিয়ে গেছে, যেখানে আমরা অনেক পিছিয়ে। গত পনেরো বছরে উচ্চশিক্ষার সিলেবাসকে আন্তজার্তিক মানদণ্ডে দাঁড় করানোর কোনো উদ্যোগকে স্বাগত জানায়নি বিগত সরকার।’
এসব কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করে উপাচার্য বলেন, ‘আমরা সিলেবাস এবং শিক্ষার্থীদের আন্তজার্তিকভাবে মানসম্মত করে গড়ে তুলতে সব ধরনের সংস্কারে হাত দিয়েছি। সিলেবাস সংস্কারের মাধ্যমে এক যুগান্তকারী পরিবর্তনের সাক্ষী হতে যাচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এর মাধ্যমে বিশ্ববাজারে শিক্ষার্থীদের বাজারমূল্য বেড়ে যাবে।’
উপাচার্য আরও জানান, এ বছর থেকে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় তার শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিতে যাচ্ছে। আরও মানসম্মতভাবে প্রতিষ্ঠানকে গড়ে তুলতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে, সমস্ত আর্থিক লেনদেন ব্যাংকের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। সর্বোপরি শিক্ষক, পরিচালনা পর্ষদ ও শিক্ষার্থীদের লেজুড়বৃত্তিক দলীয় রাজনীতির প্রভাব থেকে মুক্ত করতে হবে।
(বাংলাদেশের অর্থনীতি ডটকম/২৮ফেব্রুয়ারি)
প্রযুক্তি সহায়তায়: Star Web Host It